এলজিএসপি'র ৭লাখ টাকা বরাদ্দের ৬ লাখই আত্নসাৎ



তাহিরপুর প্রতিনিধি:

দেশের উন্নয়নের জন্য প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছেন সরকার। আর সেই বরাদ্দের টাকায় দায়সারাভাবে কাজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা।এরই ধারাবাহিকতায় 

তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় বাজার উন্নয়ন খাতে বাজারের গলি পাকাকরণ ও বাজারের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন খাতে টয়লেট নির্মাণ প্রকল্পের বরাদ্দকৃত ৭ লাখ টাকার মধ্যে ৬লাখ টাকাই আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালামের বিরুদ্ধে । 

এমন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের শ্রীপুর (খালা শ্রীপুর) গ্রামের মোঃ শাহনুর মিয়ার ছেলে, মোঃ কবির মিয়া।

অভিযোগ সূত্রে জানাযায় ২০১৯-২০-অর্থ বছরের এলজিএসপি-৩প্রকল্পের আওতায়,বাজার উন্নয়ন খাতে,বাজারের গলি পাকাকরণ কাজে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং একই বাজারের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন খাতে,বাজারের টয়লেট নির্মাণ কাজে ৪লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আবুল কালাম কে। উনি বিগত কয়েক দিন পূর্বে  শ্রীপুর বাজারের গলি পাকাকরণ ও টয়লেট নির্মাণ কাজের সমাপ্ত করেন।কিন্তু  বাস্তবে দেখা যায়,প্রকল্প অনুযায়ী বাজারের গলি পাকাকরণ কথা থাকলেও,তিনি আনুমানিক ৩০হাজার টাকা খরচ করে কাজের সমাপ্তি দেন,এবং একই ভাবে টয়লেট নির্মাণের কথা থাকলেও আনুমানিক ৮০হাজার টাকা খরচ করে একটি নিম্নমানের টয়লেট নির্মাণ করেন। ইহাতে বাজার কমিটি সহ স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ব্যাপারে গলি পাকাকরণ  কাজে সম্পৃক্ত রাজমিস্ত্রী সহ স্থানীয়দের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান বাজারের গলি পাকাকরণ কাজ বলতে আমরা কিছু দেখিনি,তবে শ্রীপুর বাজার থেকে নয়াবন্দ গ্রামের  উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান এর বাড়ি পর্যন্ত সড়কে,৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম কিছু কাজ করেছেন। এতে পুরাতন ব্লক জয়েন্ট করার জন্য তিনি  ১৯২ ফুট বালু ব্যবহার করেছেন,ও ২৬বস্তা সিমেন্ট ব্যবহার করেছেন,এবং রাজমিস্ত্রী কে দিয়েছেন  ৯ হাজার ৬শত টাকা ।এছাড়াও  কিছু অংশে মাটি ভরাট করার জন্য ২৪-২৬জন শ্রমিক লেগেছে এতে এ পর্যন্ত এ কাজ করতে তাদের তথ্যমতে এ কাজে খরচ হয়েছে প্রায় ৩২হাজার ৯ শত ৪০ টাকা মাত্র।

টয়লেট নির্মাণ কাজে সম্পৃক্ত রাজমিস্ত্রীর সাথে কথা বলতে চাইলে তার মোবাইল ফোনে অনেকবার চেষ্টা করলেও উনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান ৪লক্ষ টাকা বরাদ্দের মধ্যে আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে টয়লেট এর নির্মাণ কাজ শেষ করেন, অভিযোক্ত ইউপি সদস্য আবুল কালাম। 

এ ব্যাপারে স্থানীয় শ্রীপুর বাজার পরিচালনার আহবায়ক কমিটি সদস্য জিয়াউর রহমান আখঞ্জী জিয়া বলেন, শ্রীপুর বাজারে গনশোচাগার না থাকায়, বাজারের ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন স্থান থেকে বাজারে আসা জনসাধারণ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এতে আমরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তর সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে একটি গনশোচাগার নির্মাণের  দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের দাবি পূরণ ও দুর্ভোগের ইতি টানতে সরকার শ্রীপুর বাজারে একটি গনশোচাগার নির্মাণের জন্য ৪লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়, কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, টয়লেট নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন কারি ব্যক্তি শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ আবুল কালাম ওরফে(আবুল)  ৪লক্ষ টাকা বরাদ্দের মধ্যে দায়সারা ভাবে  আনুমানিক ৭০-৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি টয়লেট নির্মাণ কাজ শেষ করে।এতে স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান বাজার কমিটি সহ স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে শ্রীপুর বাজার পরিচালনা কমিটির  আহবায়ক ও জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোতাচ্ছির আলম সুবল বলেন আমি উক্ত বাজার কমিটির আহবায়ক, এই বাজারে টয়লেট নির্মাণ ও গলি পাকাকরণ কাজ হচ্ছে  এ বিষয়ে আমি সহ আহবায়ক কমিটির কাউকেই অবগত করেননি। কত টাকা বরাদ্দ তাও জানান নি। তবে এই টয়লেট টি টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ-টাওয়ার এলাকায় যে টয়লেটটি নির্মাণ হয়েছে, সেই ভাবেই নির্মাণ হওয়ার কথা। 

এব্যাপারে উল্লেখিত কাজ বাস্তবায়নকারি ইউপি সদস্য মোঃ আবুল কালাম ওরফে আবুলের এর' সাথে মোবাইল ফোনে  কথা হলে,তিনি কিছু না বলেই ইউপি চেয়ারম্যান হাজী খসরুল আলম এর কাছে মোবাইল ফোনটি ধরিয়ে দেন, তিনি বলেন গলি পাকাকরণ কাজে ৩লক্ষ নয় ২লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।  এখন শেষ হয়নি,ব্লক তৈরি হইতেছে, ব্লক তৈরি হলে কাজ শেষ হবে। টয়লেট নির্মাণের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী টয়লেট এর কাজ করা হয়েছে, রঙের কাজ বাকি রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল কবির এর সাথে যোগাযোগ করলে উনি বলেন এ বিষয়টি আমরা দেখিনি, পি,আই,ও অফিস দেখে,(পি,আই,ও) অফিস ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত এর কাছে জানতে চাইলে উনি বলেন এই কাজটি এলজিডি অফিসের আওতায়। 

 এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ এর কাছে জানতে চাইলে উনি বলেন, এবিষয়ে বেশ কয়েক জন আমাকে অবহিত করেছেন, বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।






*

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم