নিজের কুকর্ম আড়াল করতে স্ত্রী-সন্তানদের নামে অপপ্রচারে আরিজ খান



মোঃ মুন্না মিয়া, সিলেট ব্যুরোঃ


সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আরিজ খান নিজের কুকর্ম আড়াল করতে স্ত্রী সন্তানদের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে পরিবার। এছাড়াও লন্ডনের নেয়ার আশ্বাস দিয়ে বিবাহবহির্ভূত একাধিক শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করে অনেকেরই জীবন ধ্বংস করার অভিযোগ উঠেছে ৬৫ বছর বয়সী এ বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। স্ত্রী-সন্তানদের দেশে আসলে হত্যা সহ মামলা হামলার ভয়ভীতি দেখালে তারা  দেশে আসতে পারছেন না। ইতিমধ্যে বৃটিশ হাইকমিশনে আরিজ খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পরিবারের লোকজন আবেদন করেছেন।


অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫০ বছর পূর্বে আরিজ খান বিয়ে করেন তার আত্মীয় আয়ফুল নেছা খানমকে। বিয়ের পর খুবই ভালোভাবে চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু মাঝেমধ্যে দেশে এসে আরিজ খান কাজের মেয়ে সহ একাধিক নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত একাধিক শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করে যাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে আয়ফুল নেছা খানমের বিষয়গুলো দৃষ্টিগোচর হলে এ নিয়ে পারিবারিকভাবে বৈঠকে বসে সমাধানও হয়। একে অপরের আত্মীয় হওয়ায় এমন ঘটনা পরবর্তী হবে না বলে অঙ্গীকার করেন আরিজ খান ও তার আত্মীয় স্বজন। এমন অঙ্গীকারের কিছুদিন যেতে না যেতে আবারও পুরোনো চেহারায় ফিরে যান আরিজ খান। সিলেটের বাগবাড়িস্থ নরশিংটিলার বাসায় অবস্থানকালে বিভিন্ন মেয়েকে এনে কুকীর্তি চালিয়ে যেতেন। সর্বশেষ গেল ২০২০ সালে আরিজ খান হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার লিজা নামের ২২ বছর বয়সী এক মেয়েকে স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে লুকিয়ে বিয়ে করেন এবং স্টুডেন্ট ভিসায় অন্য এক ছাত্রের স্ত্রী পরিচয় দিয়ে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যান। যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম শহরের একটি বাসায় স্বামী স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বসবাস করছিলেন। পরবর্তীতে বিষয়টি আরিজ খানের স্ত্রী ও সন্তানদের নজরে আসলে তা অস্বীকার করলেও একপর্যায়ে স্বীকার করে নেন। এরপর পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। আবারও আরিজ খানের কুকীর্তি নিয়ে পারিবারিক বৈঠক যুক্তরাজ্যে হয়। বৈঠকে তিনি আর এমন কার্যকলাপ করবেন না বলে ক্ষমা চেয়ে নেন। এ দম্পতির ৪ ছেলে ও ১ মেয়ের কথা চিন্তা করে আয়ফুল নেছা খানম তার নামীয় সকল সম্পত্তির মধ্যে বাগবাড়িস্থ নরশিংটিলার বাসা ছেলেদের ও একমাত্র মেয়ের নামে রেজিস্ট্রারিমূলে প্রদান করেন। এ খবর আরিজ খান শুনে স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে দেশে ফিরে আসেন। তিনি ২৫ মার্চ দেশে আসার আগেই তার ভয়ে স্ত্রী আয়ফুল নেছা খানম  ২৩ মার্চ ২০২২ সালে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানায় নিজের জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি করে যুক্তরাজ্যে ফিরে যান। এরপর আয়ফুল নেছা খানম ও তার সন্তানদের বেকায়দায় ফেলতে ষড়যন্ত্রে নামেন বিয়ে পাগল আরিজ খান। পরবর্তীতে স্ত্রী ও আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। ষড়যন্ত্রমূলক মামলা থেকে আদালত অব্যাহতি দিবেন বলে আশা প্রকাশ করেন আয়ফুন নেছা।


তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ভাবে আমাকে ও আমার সন্তানদের ক্ষতি না করতে পেরে আরিজ খান সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের মানহানি করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। গেল ১১ জুন আমার নামে ও আমার সন্তানসহ আত্মীয় স্বজনদের নামে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন তথ্য উপস্থাপন করেছেন। ফলে  আমাদের মানহানি হয়েছে। মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং সংবাদ সম্মেলন প্রত্যাখান করেছি।


তিনি বলেন, বাস্তবায়িত অর্থে চরিত্রহীন আরিজ খান নারী লোভী ব্যক্তি। তিনি বাংলাদেশে অবস্থানকালে আমার বাগবাগিস্থ নরশিংটিলার বাসায় একাধিক নারীকে এনে মাদক সেবন করে আমোদ পুর্তি করতো। যা বাসার সিসিটিভি ফুটেজ চেক করলে প্রমাণ মিলবে। বর্তমানে সে আমার সন্তানদের নামে রেকর্ডকৃত সিলেট নগরের বাগবাড়িস্থ নরশিংটিলার বাসা ভাড়া করা গুন্ডাদের নিয়ে জবর দখল করে রেখেছে। আমরা এ ব্যাপারে আইনীভাবে মোকাবিলা করছি। আশাকরি আদালত আমাদের উভয়ের কাগজপত্র দেখে সঠিক বিচার করবেন।


আয়ফুল নেছা বলেন, আমরা এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বৃটিশ হাইকমিশনে আবেদন করেছি। বিষয়টি হাইকমিশন থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।


এবিষয়ে মতামত জানতে আরিজ খানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

*

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم