সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের শাল্লায় উপজেলায় এক সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস সহায়ক সুব্রত কুমার দাস। তিনি বর্তমানে গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত সাংবাদিকদের নাম বাদল চন্দ্র দাস,তিনি দৈনিক জনবানী পত্রিকার শাল্লা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। বুধবার সকালে শাল্লা উপজেলা সদরের ঘুঙ্গিয়ারগাঁও বাজারে সাংবাদিক বাদল চন্দ্র দাস নাঈমের দোকানে বসা থাকা অবস্থায় ঐ অফিস সহায়ক সুব্রত কুমার দাস এসে লাঠিসোটা নিয়ে তার উপর অতর্কিত এই হামলা চালায় । এতে তিনি গুরুতর আহত হন। সুব্রত কুমার দাস শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের সুখলাইন গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র দাসের ছেলে। এ ঘটনায় সাংবাদিক বাদল চন্দ্র দাস নিজে বাদি হয়ে সদ্য স্ট্যান্ড রিলিজ হওয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেন ও হামলাকারী সুব্রত কুমার দাসকে অভিযুক্ত করে শাল্লা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে সূত্রে জানা যায়,সাংবাদিক বাদল চন্দ্র দাসের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স অয়ন্তী এন্টারপ্রাইজ মুজিববর্ষ উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদির হোসেনের সাথে স্থানীয় চেয়ারম্যানগনের উপস্থিতিতে মৌখিক চুক্তিপত্রের মাধ্যমে বাদল চন্দ্র দাস আশ্রয়ন-২ প্রকল্পে ইট বালুসহ বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ করেন। সরবরাহকৃতের মালামালের ৪৭ লাখ টাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাওনা রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত টাকা পরিশোধের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানান টালবাহানা করে আসছিলেন ইউএনও আল মুক্তাদির হোসেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ উধর্বতন কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়। কিন্তু পাওনা টাকা না পেয়ে সর্বশেষ সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কাছে ইউএনও'র বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন সাংবাদিক বাদল চন্দ্র দাস। এই অভিযোগ দেওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষণ ক্ষিপ্ত হন বাদলের প্রতি। এরপরই অফিসের কর্মচারী সুব্রত কুমার দাসের নেতৃত্বে বাদল চন্দ্র দাসের উপর হামলা চালানো হয়। পরে উপজেলার সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত সাংবাদিক বাদল চন্দ্র দাসকে উদ্ধার করে শাল্লা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ব্যাপারে আহত সাংবাদিক বাদল চন্দ্র দাস বলেন, পুর্বপরিকল্পিত ভাবে ইউএনও আল মুক্তাদিরের নির্দেশে তার অফিস সহায়ক সুব্রত কুমার দাস আমার উপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে। সে হামলার সময় ইউএনও'র বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগের প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রাদি আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে শাল্লা উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (বর্তমানেও এলাকায় অবস্থানরত) আল মুক্তাদির হোসেন বলেন, ঘটনার কিছুই আমি জানি না। এই ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এদিকে ঘটনার পর থেকে অফিস সহকারী সুব্রত কুমার দাসের মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে। উল্লেখ্য, নানা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মুক্তাদিরকে গত ১৩জানুয়ারি প্রত্যাহার করে তৎস্থলে দিরাই উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) অরূপ রতন সিংহকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ## সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি ১৯.০১.২২