দোয়ারাবাজার প্রতিনিধিঃ
দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের রাজনপুর গ্রামে নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণে নয়, নির্বাচন পরবর্তী সংঘাত-সহিংসতা এড়াতে সাত ব্যক্তির সাথে আপাপত গ্রামবাসীকে না মেশার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল পঞ্চায়েতের এক বৈঠক থেকে। গ্রামের এক যুবক কর্তৃক সাত পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ ওঠার পর এই তথ্য জানিয়েছেন রাজনপুর গ্রামের লোকজন। ওই যুবকের দাবিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত বলছেন তারা।
১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দোহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নূর মিয়া বলেন, আমি নিজে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ছাত্রাজীবন থেকে অদ্যবধি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে আসছি। নৌকা আমারও মার্কা। কিন্তু সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে অযোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বলে আমরা বলেছিলাম। ভোটের ফলাফলে সেটা প্রতীয়মান। কিন্তু তার অর্থ এটা নয় ইউনিয়নের মানুষ নৌকাকে অপছন্দ করেন। তারা নৌকার মাঝিকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনে তৃতীয় হয়ে নৌকার প্রার্থী নিজের ভরাডুবির বদনাম ঢাকতে তার সমর্থকদের দিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার শুরু করেছেন। বিষয়টি ইউনিয়নের মানুষ বুঝেন, যেভাবে বুঝেছিলেন নির্বাচনকালীন সময়ে নিজেদের মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে আমাকে ফাঁসানোর নাটকও। নূর মিয়া বলেন, ওই সাতজন নির্বাচনের শুরু থেকেই গ্রামে নানাভাবে বিশৃঙ্খলা, মারামারি সৃষ্টি করছেন। তাদের দ্বারা যাতে আর কোনো অঘটন না ঘটে, সেজন্য তাদের থেকে সতর্ক থাকতে গ্রামের পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীকে বলা হয়েছে।‘নৌকায় ভোট না দেওয়ায় সাত পরিবারকে একঘরে করে রাখার একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে করেন রাজনপুর গ্রামের বাসিন্দা একরামুল হক সোহেল।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, দোহালিয়া ইউনিয়নে রাজনপুর গ্রামের চেয়ারম্যান প্রার্থী নূর মিয়াকে ভোট না দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার তার পরিবারসহ সাতটি পরিবারকে ‘একঘরে’ করে রাখা হয়েছে। কেউ তাদের সাথে মিশলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে বলে অভিযোগ তার।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সিংহ জানান, সাত পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার বিকালে রাজনপুর গ্রাম পরিদর্শন করে এসেছি। গ্রামের লোকজনের সাথে কথা বলেছি। তারা মিলেমিশে বসবাসের কথা বলেছেন।
উল্লেখ্য, দোহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী করেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আনোয়ার মিয়া আনু বাদে বাকি তিন দলীয় বিদ্রোহী। আনু নৌকা প্রতীকে ২ হাজার ৭৯৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। ৫ হাজার ৬২৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়ন যুগ্ম আহবায়ক শামীমুল ইসলাম শামীম। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুর মিয়া ৪ হাজার ২৪৯ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় এবং আবদুর রাজ্জাক ১ হাজার ১৬ ভোট পেয়ে চতুর্থ হন।