মোঃ আব্দুল ওয়াহিদ, জগন্নাথপুর
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হত্যা মামলার আসামি পক্ষ বাদী পক্ষকে ও সালিশী ব্যক্তিদের আসামি করে আদালতে ও জগন্নাথপুর থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করায় এলাকায় চাপা ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে। রাস্তা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষের দুইদিন পর আহত তখলিছ মিয়ার মুত্যু হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের পর থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেফতারকৃত আসামীরা জামিনে বের হয়ে আসার পর এলাকার- গ্রাম পঞ্চায়েতের- সালিশী ব্যক্তিরা বিষয়টি আপোষ- মিমাংসায় নিস্পত্তি করে, আসামিদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টাকালে একটি কু-চক্রী মহল বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহের উদ্দেশ্যে হত্যা মামলার আসামি বারিক মিয়ার স্ত্রী রাজনা বেগমকে দিয়ে আদালতে একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। আদালত অভিযোগটি আমলে না নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে জগন্নাথপুর থানায় প্রেরন করেন। উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের মিলিক গ্রামের বারিক মিয়ার লোকজন তখলিছ মিয়ার উপর আক্রমনাত্তক হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে। ২০২০ সালের ২৩ মে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনার ২ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত তখলিছ মিয়ার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত তখলিছ মিয়ার ছেলে কবির মিয়া বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ১২ জনকে আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। জানাগেছে, মামলার আসামী ময়না মিয়া, বারিক মিয়া ও সোনাফর মিয়া জেল হাজতে থাকায় তাদের পরিবারের পুরুষ ও মহিলারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাদের বাড়ি শূন্য হয়ে পড়ায় তাদের আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশী ও এলাকার সালিশী গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে চুরি ও নষ্ট হওয়া ধান, চাল ও গবাদিপশুসহ অন্যান্য মালামাল যাতে নষ্ট বা চুরি না হয়, এ জন্য এলাকার- গ্রাম পঞ্চায়েতের- সালিশী ব্যক্তিরা আলাপ আলোচনা করে তিনটি পরিবারের মালামাল বিক্রি করে তাদের বংশের প্রবীন মোরব্বী বিশ্বস্ত ব্যক্তি দুদু মিয়া মাষ্টারের মাধ্যমে জমা রাখা হয়েছে। মালামাল বিক্রির প্রায় ৫ লক্ষ টাকা যাতে তারা বাড়িঘরে এসে তাদের মালামাল বিক্রির এসব টাকা ফিরে পান। এদিকে আসামীরা জামিনে বের হয়ে আসার পর এলাকার- গ্রাম পঞ্চায়েতের- সালিশী ব্যক্তিরা তাদেরকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য আলাপ আলোচনা চলা অবস্তায় এক শ্রেনীর দালাল প্রকৃতির লোক বিষয়টাকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে বারিক মিয়ার স্ত্রী রাজনা বেগমকে দিয়ে ১২ জনকে আসামী করে সুনামগঞ্জ আদালতে ও আরো কিছু দিন পর ১৫ জনকে আসামী করে জগন্নাথপুর থানায় আরেকটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন।
এলাকার- গ্রাম পঞ্চায়েতের- সালিশী ব্যক্তি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আয়ুব খান, সমাজসেবক তাজিন মিয়া, আছলাম উদ্দিন আজাদ মিয়া, শাহ মোঃ ছানু মিয়া আব্দুল খালিক, শাহ কাওছার, নূরুল ইসলাম খান, লায়েক মিয়া, সন্দর মিয়া আলঙ্গীর খান, আলী আজগর খান, আহমদ খান, ফরিদ খান, মোসাহিদ মিয়া, শাহ মোঃ জায়েদ মিয়া জানান, বারিক মিয়ার স্ত্রী রাজনা বেগমসহ যারা বাড়ি ছেড়ে ভয়ে পালিয়ে রয়েছেন, তাদেরকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য এলাকার- গ্রাম পঞ্চায়েতের- সালিশী ব্যক্তিরা উভয় পক্ষের আত্মিয় স্বজন- মুরুব্বিদের সাথে আলাপ আলোচনা চলছিল, বিষয়টি একটা আপোষে নিস্পত্তি করার লক্ষে যাতে তারা তাদের বাড়িতে এসে আগের মত চলাচল করতে পারে। আলাপ-আলোচনা চলাকালে কে বা কারাহ রাজনা বেগমকে ফুশলিয়ে দুইটি অভিযোগ দায়ের করে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে রুপ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পঞ্চায়েতের- সালিশী ব্যক্তিরা বলেন আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যাতে বিষয়টি একটা আপোষে নিস্পত্তি হয়। আর তারা তাদের বাড়িঘরে আবার ফিরে এসে। উভয়পক্ষ একই বাড়ির একে ওপরের আত্মিয় এবং পাশাপাশি ঘর।
সরেজমিনে গেলে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার মানুষ জানান, আমাদের এলাকার প্রতিটি পাড়া ও গোষ্ঠীর লিডার- মুরুব্বিদের সমন্বয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত পরিচালিত হয়। এলাকায় যেকোন সমস্যা দেখা দিলে গ্রাম পঞ্চায়েতের- সালিশী ব্যক্তিরা এগিয়ে এসে সমস্যা সমাধানে ভুমিকা রাখেন। মিলিক গ্রামের বারিক মিয়া ও তখলিছ মিয়ার লোকজনের বিরোধের বিষয়টি গ্রাম পঞ্চায়েতের- সালিশী ব্যক্তিরা উভয় পক্ষের আত্মিয় স্বজন- মুরুব্বিদের সাথে আলাপ আলোচনা চলছিল, আপোষে নিস্পত্তি করে যাতে তারা তাদের বাড়িতে এসে আগের মত চলাচল করতে পারে। আলাপ-আলোচনা চলাকালে কে বা কারাহ রাজনা বেগমকে ফুশলিয়ে দুইটি অভিযোগ দায়ের করে আপোষে নিস্পত্তির বিষয়টাকে ভিন্নখাতে রুপ দেওয়ার চেষ্টা করছে।