জগন্নাথপুরে কাজল বাহীনির জমি দখল বানিজ্য: গ্রামের লোকজন হয়রানীর শিকার!!


জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় নিজেস্ব বাহিনি দিয়ে আধিপত্য বিস্তার করে সনাতন ধর্মের ও সরকারী জমি বিক্রয় করা সহ নানান অপকর্ম করে যাচ্ছেন সাবেক ইউপি সদস্য কাজল মিয়া। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সহ নানা অভিযোগ। 

সরজমিনে জানা যায়, ক্ষমতাসিন দল আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে গ্রামের নিরিহ জনসাধারনদের অত্যাচার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী সহ তার বিরুদ্ধে রয়েছে জমি দখলের বিস্তর অভিযোগ। এ নিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য কাজল মিয়ার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ জগন্নাথপুর থানা ও আদালতে রয়েছে ৮ এর অধিক মামলা। তার হাত থেকে রক্ষা পায়নি পুলিশও। থানা পুলিশের উপর হামলা করে আহত করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ফলে পুলিশের কর্তব্যকাজে বাঁধা প্রদানের অভিযোগে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করায় জেলও কেটেছেন তিনি। তারপরও একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন নিরিহ গ্রামবাসীকে। জানা যায়, উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের রমাপতিপুর গ্রামের মৃত মুক্তার মিয়ার ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য কাজল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গড়ে তুলেছেন একটি শক্তিশালি বাহীনি। তার বাহীনি দিয়ে গ্রামের নিরিহ লোকজনের জমি দখল, সনাতন ধর্মের পরিত্যক্ত ভূমি ও সরকারী জমি নানা কৌশলে দখল করে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় রাম রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছেন। তার অনিয়ম দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা ও হামলার শিকার হতে হয় জনসাধারনকে।

এ ব্যাপারে গ্রামের ভুক্তভোগি আবুল মনাফ, সৈয়দ মিয়া, ছোরাব উল্লাহ, নাসির মিয়া, আনছার মিয়া, ফজলু মিয়া, হারুন মিয়া, আব্দুল মমিন, ফারুক মিয়া সহ শতাধিক লোকজন জানান, মোজাহিদপুর ও চৌকি মৌজার সরকারী জায়গা বিক্রয় করে টাকা আত্মসাৎ করেন। গ্রামের লোকদের বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। ভূমি খেকো কাজল মিয়ার নেতৃত্বে হাতের লেখা স্টাম্প করে প্রতারনার মাধ্যমে ভূমিগুলো বিক্রয় করেছেন। এমনকি গ্রামের বায়তুন নুর জামে মসজিদ কমিটি ভেঙ্গে নিজে একাই দায়িত্ব নিয়ে কোন রকম হিসাব নিকাশ ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে পকেটভারি করে যাচ্ছেন। যার কারনে দীর্ঘ ৫মাস ধরে মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিনের বেতন বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। তার নিজস্ব বাহিনি দিয়ে বার বার হামলা চালিয়ে আতঙ্কে পরিনত করেছেন নিরিহ গ্রামবাসীকে। বর্তমানে কাজল বাহিনির ভয়ে গ্রামের লোকজন গ্রামের মসজিদে নামাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তার ভয়ে গ্রামবাসী গত ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন জগন্নাথপুর থানার এসআই সাফায়েত ও এসআই শামিম সহ একদল পুলিশি পাহারায়। গ্রামের রাস্তা ঘাটে চলা ফেরায় প্রতিবন্ধকতা সহ পার্শবতি শিবগঞ্জ বাজারেও আসতে পারছেন না গ্রামে নিরিহ লোকজন। বার বার অপরাধ করেও ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন অদৃশ্য খুটির জোড়ে। এ নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের মধ্যে মিশ্ন প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কাজল ও তার বাহিনির হাত থেকে রক্ষা পাননি গ্রামের অসহায় মহিলাও। বার বার আক্রমের শিকার হলেও গ্রামের লোকজন তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না। সরকারী জায়গা থেকে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করলে গ্রামবাসী বাঁধা দেন এতে হামলার শিকার হন গ্রামের নিরিহ লোকজন। রমাপতিপুর গ্রামের সংযোগ সড়কের মুখে কাজল মিয়া তার নিজস্ব লোকের কাছে সরকারী জমি বিক্রয় করে গ্রামবাসীর চলাচলের রাস্তায় বাঁধার সৃষ্টি করেন। এ নিয়ে এলাকার গন্যমান্য লোকজন বার বার শালিসির চেষ্টা করলেও সুযোগ দিচ্ছেনা এই ইউপি সদস্য। এ দিকে সম্প্রতি গ্রামবাসী ও কাজল বাহীনির মধ্যে সংর্ঘষে ঘটনা ঘটে এতে উভয় পক্ষের প্রায় ২০জন আহত হন। এ সময়  কাজল মিয়ার লোকজন কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়।

এ ব্যাপারে ভোক্তভোগী জনসাধারন কাজল মিয়া ও তার লোকদের হাত থেকে রক্ষা পেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী সহ সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন। অভিযুক্ত কাজল মিয়ার সাথে মুঠোফোনের ৩টি নাম্বারে নিউজ লেখার আগ মর্হূতে বার বার যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় আলাপ করা সম্ভব হয় নাই এমনকি কাজলের ওয়াটসআপ নাম্বারে যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেন নাই। কাজলের লোকজনের সাথে আলাপ করার চেষ্টা করা হলে তারা মন্তব্য করতে নারাজ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান শাহান আহমদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি এই গ্রামের বাসিন্দা আমাদের চেয়ারম্যান সাহেবকে নিয়ে বারবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু উভয় পক্ষের লোকজনের সম্মতি না থাকায় সমাধান করতে পারি নাই। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যারম্যান হাজী মখলিছ মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রমাপতিপুরের দুই পক্ষের লোকজনের সমস্যার জন্য আমি সহ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের নিয়ে বার বার সমাধান করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোন পক্ষেই আমাদের বিচারের তারিখ দেয় নাই। আমাাদের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সহ আরো অনেকেই বহু চেষ্টা করে সমাধান করতে পারেন নাই। সহকারী পুলিশ সুপার জগন্নাথপুর (সার্কেল) কামরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ উভয় পক্ষেই দিয়েছে। অভিযোগের আলোকে আইনআনুক ব্যবস্থা গ্রহন করতেছি। আসামী যাকে পাব থাকেই ধরবো আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

*

إرسال تعليق (0)
أحدث أقدم