জগন্নাথপুরে ফিল্মি স্টাইলে ছেলেকে নির্যাতন করলো বাবা




স্টাফ রিপোর্টারঃ



সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরে নিজ সন্তানকে রশি দিয়ে হাত বেধে বসত ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে ফিল্মি স্টাইলে নির্যাতন করছে পাষন্ড বাবা। এ ঘটনায় জগন্নাথপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। 


অভিযোগ সূত্রে জানা যায়। গত ২১ সেপ্টেম্বর  বৃহস্পতিবার রাত ১২ টায় জগন্নাথপুর পৌর শহরের জগন্নাথপুর কাঠ বাজার এলাকার একটি কলোনীতে নিজ সন্তানকে রশি দিয়ে হাত বেধে বসত ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে ফিল্মি স্টাইলে নির্যাতন করছে পাষন্ড বাবা।


দিরাই উপজেলার জগদল ইউনিয়নের রাজনাও গ্রামের আছদ্দর আলীর ছেলে আবুল কাশেম একই গ্রামের মৃত হবিবুল মিয়ার মেয়ে মুক্তা বেগমের সাথে আবুল কাশেমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জগন্নাথপুর পৌর শহরে ৭নং ওয়ার্ডে জগন্নাথপুর বাজার এলাকায় একটি কলোনীতে বসবাস করে আসছেন। সাংসারিক জিবনে তাদের ২ মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। 



জীবন জীবিকার তাগিদে প্রায় দুই বছর ৬ মাস যাবত সৌদি আররে কাজ করছেন আবুল কাশেমের স্ত্রী মুক্তা বেগম। ছেলে সন্তান নিয়ে বর্তমানে তারা দেশেই তার পিতা  আবুল কাশেমের সাথে মানবেতর জীবনযাপন করছে। গত ৩ মাস যাবত আমার মেয়ে মুক্তা বেগম সৌদিতে অসুস্থ থাকার কারণে দেশে তার স্বামীকে কোনো টাকা পাঠাতে পারেনি। সেই অজুহাতে প্রায় প্রতিদিনই ছেলে সন্তানদের অমানুষিক নির্যাতন করে পাষণ্ড পিতা আবুল কাশেম। এমনকি নির্যাতনের চিত্র মোবাইলে ধারণ করে সন্তানদের মায়ের কাছে পাঠায়। এবং ইমু মেসেঞ্জারে ভিডিও কলে রেখে সন্তানের হাত-পা বেঁধে তীরের সাথে ঝুলিয়ে বর্বর নির্যাতন চালায় সে। এসব চিত্র ধারন করে আবার সন্তানের মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে বলে টাকা না পেলে তোর সন্তানদের এক এক করে খুন করে নদীতে ভাসিয়ে দিবে। এঘটনায় এলাকায় নিন্দার ঝড় বইছে। 


পরে মুক্তা বেগমের মা নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে আবুল কাশেমের উপর শিশু নির্যাতনের অভিযোগ এনে জগন্নাথপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। 



এবিষয়ে আবুল কাশেমের স্ত্রী সৌদি প্রবাসী মুক্তা বেগম বলেন- জীবন জীবিকার তাগিদে প্রায় দুই বছর ৬ মাস যাবত সৌদি আররে আছি। ২ বছর ৩ মাস যাবত আমি নিয়মিত প্রতিমাসে টাকা আমার স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেই। গত ২ মাস যাবত অসুস্থ থাকার কারণে কাজ করতে না পারায় স্বামীকে কোনো টাকা পাঠাতে পারিনি। এরই জের ধরে আমার স্বামী আবুল কাশেম আমার ছেলে রিয়াদ মিয়া (১০) কে বসত ঘরের তীরের সাথে রশি দিয়ে বেধে ব্যাপক নির্যাতন করে। নির্যাতনের এসকল ছবি ও ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে আমার কাছে পাঠায় এবং যেকোনো সময় আমার সন্তান্দের হত্যা করার হুমকীও দেয় সে। 



এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জ থানার সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি সুভাষিশ ধর বলেন- ঘটনাটি দুঃখজনক, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাইয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।  


*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন