জগন্নাথপুরে দখলবাজদের হাত থেকে সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন



জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে দখলবাজদের হাত থেকে সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে 

আজ ২ জুন শুক্রবার বিকেল ৩ঘটিকায় জগন্নাথপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির (জগন্নাথপুর সিলেটি বাসস্ট্যান্ডস্থ) অস্থায়ী কার্যালয়ে জগন্নাথপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের হবিবপুর পশ্চিম পাড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত হাজী জবর আলীর মেয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোছা: শিবলী বেগম কর্তৃক তার পৈতৃক সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালী উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন তিনি। 

এবং স্ব-শরীরে উপস্থিত থেকে তার চাচাতো ভাই আনিসুজ্জামান রাজিব সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখিত বক্তব্যে গুলো হুবহু সবার সামনে তুলে ধরা হলো-

জাতির বিবেক সাংবাদিকগণ আসসালামু আলাইকুম ও আদাব। 

বিপদগ্রস্থ হয়ে মানুষের যখন কোথায় যাওয়ার জায়গা থাকেনা তখন মিডিয়ার শরনাপন্ন হয়। সত্য বিষয়গুলো তুলে ধরতে মিডিয়া একটি পরিবারকে সহযোগিতা করে থাকে। আমরা তেমনিভাবে বিপদগ্রস্থ! তাই মিডিয়ার শরনাপন্ন হতে বাধ্য হলাম। এই কঠিন সময়ে আপনাদের ক্ষুরধার লেখনী আমাদের যথেষ্ট সহযোগিতা করে থাকবে।

জাতীর কান্ডারীগণ

আমি একজন বিট্রিশ প্রবাসী নারী। জীবনের যুদ্ধে আমরা প্রবাসে বসবাস করি। নারীর টানে আমরা দেশে আসি। প্রবাসে থেকে জীবনের সাথে সংগ্রাম করে আমরা দেশে সম্পদ জুড়াই। কিন্তু এই প্রবাসাইদের সম্পত্তি কখনো জোর জবরদস্তি করে প্রভাবশালীরা দখলে নেয়। দেশে এরকম ঘটনা অহরহ ঘটছে। এমনই  এক ভুক্তভোগী আমি ও আমার পরিবার। দেশের অর্থনৈতিক খাতের বড় একটি অর্জন প্রবাসীদের রেমিট্যান্স। প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের টাকায় দেশের অর্থনীতির চাকা  ঘুরে। দেশের প্রতি আমাদের একটি বড় অবদান থাকার পরও প্রভাবশালীদের কূটকৌশল আর শক্তির বলে আমরা বরাববই কুপোকাত। এমনই এক ভূক্তভোগী হয়ে আজ আপনাদের শরনাপন্ন হলাম।

সংগ্রামী কলসৈনিকগণ 

আমি মোছা: শিবলী বেগম একজন যুক্তরাজ্য প্রবাসী। আমরা এক বাবার ঔরস্যে এক ভাই ও দুই বোন। আমাদের পেতৃক নিবাস সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের হবিবপুর (পশ্চিমপাড়া)। আমরা দুইবোন এক ভাই (ভাই মারা গেছেন) আমরা সবাই যুক্তরাজ্যে বসবাস করি। মাঝে মধ্যে দেশ মাতৃকার টানে দেশে বেড়াতে আসি। 

কিন্তু আমার ভাই মৃত আব্দুন নুর জীবদ্দশায় থাকাকালে তার শ্যালক সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা আবুলেইছ ও আরো কিছু দুস্কৃতিকারী পৈতৃক সম্পত্তি থেকে আমাদের বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে আমার ভাইকে নানা ভাবে ফুসলাতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা আমাদের বাপ দাদার নামের রেকর্ড জালিয়াতি করে আমার ভাইয়ের নামে জাল দলিল তৈরি করে। যা আইনত অপরাধ হিসেবে গণ্য।

এই নিয়ে আমরা বহুবার এলাকায় সালিসি বৈঠক সহ নানা পদক্ষেপ নিলেও  কোনো সুফল পাইনি। পরে আদালতের শরনাপন্ন হই।

আমার ভাই আব্দুন নুর যু্ক্তরাজ্যে মারা যাওয়ার আগ থেকেই হবিবপুর গ্রামের মৃত শফিক মিয়ার ছেলে আজিদ মিয়া বাড়িটি দেখা শোনা করতেন। 

কিন্তু আমার ভাইয়ের শ্যালক সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা আবুলেইছ ও কেয়ার টেকার আজিদ মিয়া বাপ দাদার সম্পত্তি থেকে আমাদের বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে নানা ভাবে তাদের চক্রান্ত অব্যাহত রাখে।

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা 

আমি যেটা বলতে চাই যে সম্পত্তি নিয়ে আমাদের মধ্যে সমস্যা  হচ্ছে সেটা আমার বাবার সম্পত্তি। এই জমির কিছু দলিলপত্র ও রেকর্ড আমার কাছে থাকলেও সবগুলো হাতে আনতে পারিনি। বিবাদী আবু লেইছ ও আজিদ মিয়া ঘরের তালা ভেঙে সবগুলো দলিলপত্র নিয়ে গেছে।  আমার বাবা ১৯৯২ সালে মারা যান। আমাদের বাবা মারা যাওয়ার পর ১৯৯৫ সালে আমার ভাই আব্দুর নুর কিছু দুষ্ট লোকের চক্রান্তে নিজের নামে রেকর্ড নেন। এমনকি দলিল জালিয়াতিও করা হয়। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আদালতের শরনাপন্ন হয়ে বাটোয়ারা মামলা করি। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে আমার চাচাতো ভাই একটি স্বত্ত্ব মামলাও দায়ের করেন। 

আলমারি ভেঙে এবং লুটপাট করে দলিলপত্রসহ মূল্যবান অন্যান্য জিনিস লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা

তাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করি। 

অভিযোগটি বর্তমানে তদন্তাদ্ধাইন রয়েছে।আমাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত কর্তৃক ১৪৪ ধারাও জারি করা হয়। কিন্তু তার পরেও আমার সিলেটস্থ বাসায় গিয়ে আবু লেইছসহ আরো কয়েকজন লোক নানাভাবে আমাদের হুমকি ধমকী দিয়ে  আসছে। যার সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে। হুমকিদাতা আবু লেইছের কাছে সবসময় বন্দুকও থাকে।

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা 

যুক্তরাজ্যে আমার ভাইয়ের যে সম্পত্তি  ছিল সেখানে নিয়মমাফিক আমাদের কোনো অংশ নাই। কিন্তু তার পরও আমাদের ভাই সেখানের সম্পত্তির একটি ভাগ আমাদের দিয়ে গেছেন।

আপনাদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আমাদের অভিযোগের মূল সত্যতা খুঁজে পাবেন। প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা উপরোল্লিখিত বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করে আশা করি জাতির সামনে উপস্থাপন করবেন। আমরা যেন আমাদের পিতৃ পরিচয়টা দিতে পারি, আমরা যেনো বলতে পারি আমরা বাঙ্গালী জাতী, আমাদের সন্তানরা যেনো আমাদের সেই পরিচয়টা ধরে রাখতে পারে।  

আর এই ঘটনার পেছনে শুধু আবুলেইছ, আজিদ মিয়া নয়, আরো অনেকেই আছেন। আমার বাবার সম্পত্তি দাদার সম্পত্তি এই (গলাকাটা কুছকরদের) কাছ থেকে যেনো উদ্ধার করতে পারি।

আমাদের আপন ভাই আব্দুন নুর ও আমরা দুই বোন হামিদা বেগম ও শিবলী বেগম, আমার একজন ফুফু, ফুফাতো ভাই জিল্লুর রহমান জিলু, ফুফাতো বোন রেহেনা বেগম। আমাদের চাচা ওয়ারিস আলী এবং চাচাতো ভাইবোন পাঁচজন।

বিবাদী আবুলেইছ তার বন্দুকের জোরে গত ৪০ বছর ধরে আমাদের এই সম্পত্তি ভোগ দখল করে খাচ্ছে। এই আবুলেইছ বলেন আর আজিদ মিয়া বলেন চাঁদাবাজি আর মাস্তানিতে তারা উস্তাদ। তাদের মতো নোংরা আর খারাপ মানুষ পৃথিবীতে আরেকজন নাই। 

তাদের ভয়ে আমরা কেউ বাড়ী ঘরে যেতে পারিনা। তারা চায় তাদের ভয়ে যেনো আমরা আর দেশে যেতে না পারি। সম্পত্তি যাতে ওরা একাই ভোগ করে খাইতে পারে। 

প্রিয় সাংবাদিক ভাইয়েরা 

আপনাদের কাছে অনুরোধ আমাদের বাপদাদার এই সম্পত্তি কোনো ভাবে কারো কাছে যেনো এই অসৎ লোকগুলো 

বিক্রি করেতে না পারে তা আপনারা লেখনির মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপন করুন। এবং এবিষয়ে আমরা প্রশাসন সহ সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

শুনেছি এই প্রতারক চক্ররা নাকি জাল দলিল করে আমাদের এই সম্পত্তি বিক্রি করার প্রায়তাঁরা করছে। যা বাঙ্গালী জাতী হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার। 

সারা দেশের প্রশাসনের কাছে আমাদের একটাই দাবি এই প্রতারক দুষ্ট চক্রের হাত থেকে  আমাদের বাপ দাদার সম্পত্তি যেনো রক্ষা করতে পায় এবং আমরা যেনো আমাদের প্রাপ্য সম্পদ বুঝে পাই।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি শেখ ফজর আলী, মো: সুমন আহমেদ, 

আব্দুল করিম, নাসির মিয়া, ইমরান হাসান,  সহ আরো অনেকে।

*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন