আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের বিচক্ষণতায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ০২ ডাকাত গ্রেফতার

 

মোঃ সাইফুল আল মামুন/ আরশাফুল হক মুক্ত দামুড়হুদা চুয়াডাঙ্গা


ছিনতাই হওয়া পাখিভ্যান উদ্ধার, বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান

গত ০৩.০৪.২০২২ খিঃ তারিখ আলমডাঙ্গা থানাধীন কুমারী সাকিনের মোঃ ইশা ৫৪ তাহার পাখিভ্যান নিয়ে ভাড়া মারার জন্য আলমডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। রাত্র অনুমান ০২.১৫ ঘটিকার সময় তাং-০৪/০৪/২২ ইং চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে অজ্ঞাতনামা দুইজন ব্যক্তি আলমডাঙ্গা থানাধীন ফরিদপুর দোহারপাড়া যাওয়ার জন্য ভ্যানচালক মোঃ ইশা’র পাখিভ্যান ১০০ টাকা  ভাড়া ঠিক করে। তিনি উক্ত যাত্রীদের নিয়া রাত্র অনুমান ০২.৩০ ঘটিকার সময় ফরিদপুর দোহারপাড়া জোহা ঈদগাহ মাঠের সামনে পৌঁছালে উক্ত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ০২ জন তাকে পাখিভ্যান থামতে বলে এবং জোরপূর্বক ভ্যান নিতে চাইলে ভ্যানচালক ইশা বাঁধা প্রদান করিলে উক্ত ব্যক্তিদ্বয় ধারালো চাপাতি দিয়ে উপর্যুপুরি মাথা, ঘাড়ে, হাতে কোপাইয়া ভ্যানচালক ইশা কে গুরুতর রক্তাক্ত আহত করে তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে পাখিভ্যানটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। 

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ ইশাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হারদি আলমডাঙ্গায় চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। তাহার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ডাক্তার তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করেন। ইশা বর্তমানে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন। এর পরপরই পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গা মহোদয়ের নির্দেশে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার ও পাখিভ্যান উদ্ধারের জন্য ব্যাপক তৎপর হয়ে ওঠে। উক্ত ঘটনায় ভ্যান চালক ইশার  ছেলে রাজন আলী বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি দস্যূতা মামলা করেন। যাহা আলমডাঙ্গা থানার মামলা নম্বর-০৪, তারিখ-০৬.০৪.২০২২, ধারা-৩৯৪ পেনাল কোড। উক্ত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নিঃ স্বপন কুমার সরকার। 


আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের টিম অপরাধীদের গ্রেফতার ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য রাত্রিকালীন টহল টিম বৃদ্ধি করে। উক্ত ডিউটির ধারাবাহিকতায় অফিসার ইনচার্জ আলমডাঙ্গা থানার নেতৃত্বে এসআই সুমন্ত বিশ্বাস, এসআই শরিয়্যতুল্লাহ ভূইয়া, এস আই মোঃ মনিরুল ইসলাম, এএসআই মোঃ হামিদুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ রেল ষ্টেশনসহ পৌর এলাকায় রাত্রকালীন চুরি, ছিনতাই প্রতিরোধ ও হোন্ডা মোবাইল টহল ডিউটিতে বাহির হয়ে ১৩.০৪.২০২২ খ্রিঃ তারিখ রাত্র ০২.১৫ ঘটিকার সময় আলমডাঙ্গা থানাধীন রেলষ্টেশনে হাজির হয়


 সৈয়দপুর থেকে ছেড়ে আসা সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেন আলমডাঙ্গা রেল ষ্টেশনে পৌছাইলে ভ্যান চালকরা স্বাভাবিকভাবে যে যার মত যাত্রী নিয়ে চলে যাচ্ছিল। পুলিশ প্রতিটি যাত্রীর নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসাসহ গন্তব্যের স্থান জেনে সন্দেহজনক যাত্রীদের তল্লাশি করে ছেড়ে দেয়। এরই মধ্যে কতিপয় যাত্রী পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে আলমডাঙ্গা ষ্টেশনপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের পিছনে গিয়ে অবস্থান করছিল। আলমডাঙ্গা থানার এসআই সুমন্ত বিশ্বাস দূর থেকে দেখে সন্দেহ হলে অফিসার ও ফোর্স নিয়ে সেখানে যায় তখন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন দৌড় দিলে পুলিশ সদস্য দৌড়াইয়া তাদের আটক করতে ব্যর্থ হয়। তখন আসামী ১। মোঃ রাশেদুল ইসলাম @ কানা সমুন (৪৫), পিতা-সিরাজুল ইসলাম, মাতা-মৃত রেখা খাতুন, ঠিকানা: স্থায়ী: সাং- ক্যানেলপাড়া (সোনাপট্টি), উপজেলা/থানা: আলমডাঙ্গা, জেলা: চুয়াডাঙ্গাকে পেয়ে তার নিকটে থাকা একটি স্কুল ব্যাগ পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তল্লাশি করতে গেলে আসামী মোঃ রাশেদুল ইসলাম @ কানা সুমন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করিলে আসামীকে গ্রেফতার করতে গেলে পাশে থাকা ইট হাতে নিয়ে এসআই সুমন্ত বিশ্বাস, এসআই শরিয়তুল্লা ভূইয়া দ্বয়ের ইট দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আহত করে। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে আসামীকে হ্যান্ডকাপ পড়াতে সক্ষম হয়। আসামীর ব্যাগ তল্লাশি করিয়া ব্যাগের মধ্য (০১) ০২ টি চাপাতি, (০২) ০১টি সেলাই রেঞ্জ, (০৩) ০১টি লোহার ব্লেড (কাটার), (০৪) আসামী মোঃ রাশেদুল ইসলাম @ কানা সুমন এর ০১টি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। তখন আসামী স্বীকার করে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সে সহ ৭/৮ জন উক্ত স্থানে সমবেত হয়েছে। আসামীও ধস্তাধস্তিতে আহত হলে, গুরুত্বর আহত এসআই সুমন্ত বিশ্বাস, এসআই শরিয়্যতুল্ল্যা ভূইয়াসহ তাৎক্ষনিক রওনা হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হারদী, আলমডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গায় প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। এসআই সুমন্ত বিশ্বাস গুরুত্বর আহত হওয়ায় তাকে ভর্তি করানো হয়। 


আসামী কানা সুমন সহ অজ্ঞাতনামা ০৭/০৮ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ কে মারধর ও ডাকাতির জন্য সমাবেত হওয়ার মামলা রুজু হয়। যাহা আলমডাঙ্গা থানার মামলা নং-১০, তাং-১৩.০৪.২০২২ খ্রিঃ, ধারা-৩৯৯/ ৪০২/১৮৬/ ৩৩২/৩৩৩/৩৫৩ পেনাল কোড। উক্ত মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই মোঃ জামাল হোসেন।

*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন