বাগলী-সুনামগঞ্জ সড়কের প্রধান রাস্তার বেহাল দশা-দেখার কেউ নেই



সাবজল হোসাইন, তাহিরপুর: 

সুনামগঞ্জ তাহিরপুর উপজেলার সরকারের রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত জনপদ বাগলী কয়লা, চুনাপাথর আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক স্টেশন থেকে বড়ছড়া কয়লা,চুনাপাথর আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ১০-১২ কিঃ মিঃ মাটির রাস্তার বেহাল দশা থাকায় সর্বস্তরের মানুষ চরম ভোগান্তি পোয়াচ্ছেন। যেন দেখার কেউ-ই নেই।

১নং উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত জনপদ বাগলী কয়লা, চুনাপাথর আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক স্টেশন, চাঁরাগাও কয়লা, চুনাপাথর আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক স্টেশন  এবং বড়ছড়া কয়লা, চুনাপাথর আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক স্টেশনের প্রধান রাস্তাটি মাটির হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় কাদা হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার মানুষের কাজে ও ব্যবসায় ব্যাঘাত ঘটেছে। 

ওই ৩ টি শুল্ক স্টেশন থেকে সরকার প্রতিবছরই কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পেয়ে থাকেন অথচ ওই ৩টি শুল্ক স্টেশনের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় কয়লা, চুনাপাথর ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে বছরের পর বছর ধরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃষ্টিতে একাধিক স্থানে ছোট-বড় খানাখন্দে পরিণত হচ্ছে রাস্তাটি, অনেক জায়গায় রাস্তার দুই ধারের মাটি সরে গিয়ে রাস্তা ভেঙে পড়ছে। মালবাহী ট্রলি, ব্যাটারিচালিত ভ্যানগাড়ি ও মোটরসাইকেল আরোহীদের চড়ম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এছাড়াও রাস্তাটি দিয়ে কয়েকটি স্কুল-মাদ্রাসা ও ট্যাকেরঘাট স্কুল ও কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে থাকে কিন্তু বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটিতে কাদা পানি থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরা। র্দীঘ সময় পার হলেও গ্রামীণ এই অবহেলিত মরণফাঁদ রাস্তায় এখন পর্যন্ত আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া লাগেনি। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন শতশত ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে। উপজেলার বিভিন্ন বড় রাস্তাসহ অনেক ছোটখাটো রাস্তা পাকা করণ করলেও এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা পাকা করণ করা হচ্ছে না। বাগলী কয়লা ও চুনাপাথর আমদানি কারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পল্লী চিকিৎসক মনিরুজ্জামান মনির জানান-বাগলী বাজার থেকে বড়ছড়া জয়বাংলা বাজার পযর্ন্ত এই রাস্তা এতটাই খারাপ যে মালবাহী ট্রলি, ভ্যানগাড়ি ও মোটর সাইকেল আরোহীরা এ রাস্তায় চলাচল করতে হিমসিম খায়। আর বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই কোনো গাড়িতো দূরের কথা পায়ে হেটেও যাওয়া যায় না।

তিনি আরও বলেন, মানুষের চিকিৎসা ও নানা কাজের জন্য উপজেলা ও জেলা সদরে যেতে হলে এই রাস্তা দিয়েই আমাদের যেতে হয়।এই রাস্তাটিই আমাদের চলাচলের প্রধান রাস্তা।

কয়লা ও চুনাপাথর ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, বাগলী বাজার থেকে বড়ছড়া জয়বাংলা পর্যন্ত প্রায় ১০-১২ কি. মি. রাস্তাটি র্দীঘদিনেও জনসাধারণের চলাচলের জন্য পাকা করণ করা হয়নি।

বর্ষাকালে পানি সড়কের উপড় দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে প্রতিবছর সড়ক ভেঙে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বৈশাখ থেকে শ্রাবন মাস পর্যন্ত অতি মাত্রায় বৃষ্টি পাতে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক, বয়স্ক ব্যাক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌছিয়েছে। এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য তিনটি শুল্ক স্টেশনের ওই রাস্তাটি সরকারের নজরদারি করা হলে হাজার হাজার ব্যবসায়ীসহ এলাকার অবহেলিত জনতা কিছুটা স্বস্তি ফিরে পাবে। 

স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন- আমাদের এলাকা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দারপ্রান্তে হওয়ায় বর্ষাকালে ও ভারী বৃষ্টি হলে পাহাড়ি ঢলে আমাদের  বাড়িঘর, খেলার মাঠসহ রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যায়, তাছাড়া গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় জরুরী রুগী হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় এবং অধিকাংশ স্থানে রাস্তা ভাঙ্গাচোরা থাকায় আমাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকার রাস্তাটি পাকা করণ করা হলে আমাদের কষ্ট দূর হবে। এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন হবে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে। এবং অনতিবিলম্বে   রাস্তাটি দ্রুত পাকা করণে সংশ্লিষ্টদের কাছে র্দীঘদিনের দাবী বলে জানান স্থানী বাসীন্দারাসহ ব্যবসায়ীরা।

*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন