আমিনুর রহমান জিলু
সারাদেশের খামারীদের নিয়ে আগামী ২রা নভেম্বর ৬ দফা দাবিতে- জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করবে বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প সংগঠন। পোল্ট্রি খাদ্য ও ১ দিনের বাচ্চার লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধির কারণে ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করবে এই সংগঠনটি। দেশে ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালি, হাস, ব্রিডার, দেশী মুরগী সহ অন্যান্য ছোট বড় প্রায় ৬০ লাখ খামার রয়েছে। কিন্তু পোল্ট্রি খাদ্যে ও বাচ্চার অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে লোকশান গুনতে গুনতে নিঃস্ব হচ্ছেন দেশের লাখ লাখ খামারী। জমি জমা, বাড়ি ঘর বিক্রি করেও ডিলারের ঋন পরিশোধ করা যাচ্ছেনা বলেও জানা যায়। একারণে দেশের বেশিরভাগ খামার বন্ধ থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে গোটা পোল্ট্রি শিল্প। অন্যদিকে দেশের করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে উৎপাদন ঘাটতি আর পরিবহন সংকটের অজুহাতে দফায় দফায় পোলট্রি খাদ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকটি খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদনকারী (সিণ্ডিকেট) প্রতিষ্ঠান।
এর ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন পোল্ট্রি খামারিরা। বিগত কয়েক মাসে লোকসানের বোঝা টানতে না পেরে বন্ধ রয়েছে লাখ লাখ পোল্ট্রি খামার। এ শিল্পে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। খামার মালিকরা জানান বাচ্চা লালন পালন করতে যে টাকা খরচ হয় বিক্রি করে সে টাকাই উঠছে না। উল্টো জমি জমা বাড়ি ঘর বিক্রি করে ডিলারের টাকা পরিশোধ করতে হয়।
নিম্নে তাদের ৬ দফা দাবিগুলো উল্লেখ করা হলো
দাবি ১.
খাদ্যের মান বৃদ্ধি করে ব্রয়লার ৫০ কেজি প্রতি বস্তা খাদ্যের দাম- ২০০০ থেকে ২১০০ টাকা, লেয়ার ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকার মধ্যে রাখতে হবে।
দাবি ২.
ব্রয়লার ও লেয়ার সকল প্রকার মুরগির বাচ্চার দাম বাৎসরিক ভাবে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে রাখতে হবে এবং বাচ্চার মান বৃদ্ধি করতে হবে।
দাবি ৩.
খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো তারা নিজেরা খাদ্য বাচ্চা উৎপাদন করে খামারিদের কাছে বিক্রি করে এবং নিজেরা ব্রয়লার ও লেয়ার সহ সকল প্রকার রেডি মুরগি উৎপাদন করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে, তাই খামারিরা ধ্বংসের পথে সেই ক্ষেত্রে কোম্পানিদের রেডি মুরগি উৎপাদন করা বন্ধ করতে হবে।
দাবি ৪.
আমরা প্রণোদনার টাকা চাইনা, আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বিনীতভাবে অনুরোধ থাকবে বাংলাদেশের প্রতিটি উপজেলায় ৩০০ জন নিবন্ধিত খামারীকে স্বল্প সুদে সহজ শর্তে প্রতি ১০০০ মুরগি পালনকারী খামারীকে কমপক্ষে ২ লক্ষ টাকা ঋণ দিতে হবে।
দাবি ৫
প্রতি একজন খামারি দশ হাজার মুরগির উপরে কোন প্রকার রেডি মুরগি উৎপাদন করতে পারবে না।
দাবি ৬.
সারা বাংলাদেশ থেকে উঠে আসা প্রান্তিক খামারিদের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আমাদের সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দিতে হবে।।
২ তারিখের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ সফল করতে দেশের সকল প্রান্তিক খামারীদের উপস্থিত থাকার আহবান জানিয়েছন বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প সংগঠন এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যগণ।