জগন্নাথপুর ( সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নে আছিমপুর এলাকায় প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর নিয়ে হয়েছে অনিয়ম। সারা দেশে ভূমিহীন-গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জগন্নাথপুরে ঘর নিয়ে রশি টানাটানি করছেন চেয়ারম্যান ও তহশিলদার। যাদের জায়গা আছে, তাদের নাম ঘরের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের আছিমপুর গুচ্ছ গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৬০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রতিটি ঘরের সুবিধাভোগীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তহশিলদার হাফিজ উদ্দিনকে। আর তিনি মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে ঘর বরাদ্দে করছেন অনিয়ম।স্হানীয় ধীরা বিশ্বাসের নিজের জায়গা আছে। স্থানীয় লক্ষ্মী রানী বিশ্বাসের নিজের নামে ও তার ছেলে মদন বিশ্বাসকে সরকারি ঘর পাওয়ার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন তহশিলদার। কিন্তু তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন টাকার বিনিময়ে তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সাজনা বেগম (তার মেয়ে সৌদি প্রবাসী), জুয়েল মিয়া (তার ভাই সৌদি প্রবাসী), পারুল বেগম (ছেলের রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আছে এবং সাত লক্ষ টাকায় জায়গা কিনেছেন), সুমেনা বেগম (তার বিয়ে হয়েছে সিলেট), সামছুল ডাক্তার (রানীগঞ্জ বাজারে ফার্মেসি ব্যবসা আছে) সহ এমন অনেককে প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর দিয়েছেন তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন।
Most favourite bangla news | ajkeralo |
আজকের আলাে | লাখাে পাঠকের অনলাইন
ঠিকানা | www.ajkeralo.com
রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুড়ি-চানাচুর বিক্রেতা রাখাল দাসের বাড়ি-ঘর নেই। কিন্তু তার নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। রিপন চন্দ্র শীল,, ধীরা রাজ বিশ্বাস, তাদের বাড়ি ঘর নেই। তার নাম কেবল যারা টাকা দিয়েছে তাদের নামে ঘর বরাদ্দ হয়েছে। এমন অভিযোগ করেছেন হতদরিদ্র পরিবারের ২০ জন ভুক্তভোগী। রানীগঞ্জ ইউনিয়নের তহশিলদার হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে তারা প্রধানমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।। অভিযোগে উল্লেখ করা হয় তহশিলদার প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অনিয়ম করেছেন। রানীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. ছরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নিয়ে তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন অনিয়ম করেছেন। বাগমনা গ্রামের দুলন মিয়া জানান, তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন এলাকায় গিয়ে যাচাই-বাছাই না করে ঘরে বসে স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় অনিয়ম করেছেন।
Most favourite bangla news | ajkeralo |
আজকের আলাে | লাখাে পাঠকের অনলাইন
ঠিকানা | www.ajkeralo.com
ঘরের জন্য আবেদনকারী রিপন চন্দ্র শীল বলেন, আমরা হতদরিদ্র পরিবারের লোক। গুচ্ছ গ্রামে ঘরের জন্য গত ১৮ মার্চ আবেদন করি। আবেদন করার পর যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তখন তহশিলদার আমার নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। কিন্তু পরে আনন্দ বিশ্বাসের কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে আমার নাম বাদ দিয়ে তার বৌ ও ছেলের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এর বিচার চাই।
Most favourite bangla news | ajkeralo |
আজকের আলাে | লাখাে পাঠকের অনলাইন
ঠিকানা | www.ajkeralo.com
ধীরাজ বিশ্বাস বলেন, আমরা হতদরিদ্র লোক। আমরা টাকা না দিতে পারায় আমাদের নাম বাদ দিয়েছেন তহশিলদার হাফিজ উদ্দিন। আমরা হতদরিদ্র পরিবারের লোকজন প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বিচার চাই। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হাফিজ উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যাচাই-বাছাই করে তালিকা করেছেন। অভিযোগের বিষয়টি আমি দেখছি।
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বলেন, আমাদের কাছে কিছু নেই। সব তালিকা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান।
Most favourite bangla news | ajkeralo |
আজকের আলাে | লাখাে পাঠকের অনলাইন
ঠিকানা | www.ajkeralo.com
রানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম রানা বলেন, আমরা ভূমিহীনদের নামের তালিকা তহশিলদারকে দিয়েছি। সেগুলো যাচাই-বাছাই করেছেন তহশিলদার। এখন শুনেছি সঠিক ভূমিহীনদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেননি তিনি। জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। যদি কেউ টাকা নিয়ে ঘর দিয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাদের জায়গা আছে, তাদের নাম তালিকায় থাকলে সেসব নাম বাদ দেওয়া হবে।