পুলিশী হয়রানির শিকার হলেন একাত্তর টিভির সাংবাদিক!



সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:

জাতীয় দৈনিক  কালেরকন্ঠ ও বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভির সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি লকডাউনে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশী হয়রানির শিকার হলেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে পৌর শহরের ওয়েজখালী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। 

বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে দৈনিক কালেরকন্ঠ ও একাত্তর টিভির সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শামস শামীম  একাত্তর টিভির একটি লাইভ প্রোগ্রাম করতে হাওরের দিকে নিজস্ব মোটর সাইকেল যোগে  যাচ্ছিলেন। 

পৌর শহরের ওয়েজখালীস্থ এলাকায় আব্দুর রাজ্জাক নামে এক পুলিশ সদস্য তাকে আটকিয়ে মুভমেন্ট পাস চান। পেশাগত দায়িত্বপালন করতে যাতায়াত এবং সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর উল্টো ক্ষিপ্ত হয়ে তার মোটর সাইকেলের চাবি কেড়ে নেন ওই পুলিশ সদস্য ।

এরপর শামস শামীম বিষয়টি প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিজের ফেইসবুক আইডিতে এবিষয়ে পোস্ট করেন। 

তিনি লিখেছেন, ‘আজ ১৫ এপ্রিল। 'কঠোর' লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। পুলিশ কোথাও কঠোর, কোথাও ঢিলেডালা। তবে কখনো প্রশ্নহীন বাড়াবাড়ি করছেন।

কিছুক্ষণ আগে আমি হাওর থেকে ফিরেছি। একাত্তর টিভিতে হাওরের স্টোরি নিয়ে লাইভ দিয়ে আসলাম। ওয়েজখালিতে জনাব রাজ্জাক নামের একজন পুলিশ থামালেন। কিছু না বলেই চাবি নিয়ে নিলেন। বেয়াদবিটা সহ্য হলোনা। তাই মুখ ছোটালাম। আমি লকডাউনের আওতা বহির্ভুত পেশাজীবী। একাত্তর টিভি ও কালের কণ্ঠে কাজ করি। বললেন, মুভমেন্ট পাস দেখান। বললাম সাংবাদিকদের জন্য মুভমেন্ট পাস প্রযোজ্য নয়। তিনি বেহুধা কথা বাড়াচ্ছেন কোথাও বলা হয়েছে আপনি লকডাউনের আওতাভূক্ত দেখান। বললাম সরকারি ১৩ দফা নির্দেশনা আপনার মোবাইল সার্চ করে জেনে নিন। এ কথায় তিনি কোল্ড হওয়ার বদলে আরো গরম হলেন।

বললেন ডিসি ইউএনও সাহেব বললে গাড়ি দেব। আমি বললাম ঠিক আছে বাইক রেখে দিন আমি চললাম। আরেক পুলিশ ভাই এগিয়ে এসে বললেন, স্যার উনি সাংবাদিক চাবি দিয়ে দেন। চাবি দিলেন, কিন্তু গর্জন থামছেনা। পরে দুইজন পুলিশ সদস্য ও একজন পথচারী চাবি ফেরত দিলেন।

আর পুলিশ সদস্য রাজ্জাক সাহেব গর্জেই যাচ্ছেন, আবোল তাবোল। চাবি নিয়ে চলে আসলাম। ঘটনাটা ফোনে অবগত করলাম এসপিকে। 

খামোখা ঝামেলায় ঝড়ানো এমন পুলিশ, বাহিনীর সুনাম নষ্ট করছে। একজন নাগরিক হিসেবে এমন হয়রানি ও মুর্খামির প্রতিবাদ জানাই।

এই পোস্টে গত কয়েক ঘন্টায় অসংখ্য নেটিজেন মন্তব্য, শেয়ার করার মধ্য দিয়ে এরকম হয়রানির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এদিকে সাংবাদিক শামস শামীমের এই পোস্টটি জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখার যুগ্মসচিব মো. সাবিরুল ইসলাম’র নজরে এসেছে। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি পঙ্কজ দে এরকম ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বললেন, চিকিৎসক নাস, পুলিশ সদস্যরা যেমন ঝুকি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সেবা দিচ্ছেন তেমনি সাংবাদিকরাও জীবনের ঝুকি নিয়ে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন। এখন আমাদের দায়িত্ব পালনে পুলিশ যদি হয়রানি করেন তাহলে সত্যি বিষয়টি দুঃখজনক। 

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বললেন, বিষয়টি দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে  ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারকে বলবো।

*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন