স্কুলছাত্র অনিক বর্মণকে নৃশংসভাবে খুন



সাবজল হোসাইন

সুনামগঞ্জে জুবিলীর দশম শ্রেণির স্কুল ছাত্র অনিক বর্মণকে দুর্বৃত্তরা নৃংশস ভাবে হত্যা করেছে।

থানা পুলিশ কতৃক রবিবার সন্ধায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও আদালত ভবন লাগোয়া নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবনের নিচ তলা হতে উদ্যারকৃত লাশটিই হল নিহত অনিক চন্দ্র বর্মণের।

সে তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের তেলিগাঁও গ্রামের প্রদীপ বর্মণ ও অঞ্জনা রাণী পাল দম্পতির ছেলে।

সোমবার সকালে সুনামগঞ্জ সদর মডেল হাসপাতালে গিয়ে পরিবারের লোকজন তার লাশ শনাক্ত করেন।

পারিবারিক সুত্র জানায়, জেলা শহর সুনামগঞ্জের পশ্চিম নতুন পাড়ায় পরিবারের সাথে ভাড়াটিয়া বাসায় থেকে প্রাচীন বিদ্যাপীঠ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতেন অনিক।

রবিবার দুপুর ১টার দিকে অনিক বাসা হতে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি।এরপর বিকাল পর্যন্ত সে বাসায় ফিরেনি। বাসায় ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে পরিবারের লোকজন ধারণা করেন সে হয়তো দোল পূর্নিমার কোন অনুষ্ঠান রয়েছে সেকারনেই বাসায় ফিরতে বিলম্ভ হচ্ছে।

এদিকে রাতেও  বাসায় না ফেরায় দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে যান পরিবারের লোকজন।  ভোর থেকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সোমবার সকালেই খবর পাওয়া যায় পুলিশ রবিবার সন্ধায়  এক ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার করেছেন। পরে হাসপাতালে গিয়ে অনিকের বিভৎস লাশ দেখেন মা বাবা সহ পরিবারের লোকজন।

ধারণা করা হচ্ছে ওই দিন বেলা ১ টা হতে বিকেল  ৪ টার মধ্যে জেলা প্রশাসন ও আদালত ভবন লাগোয়া নির্মাণাধীন ১০ তলায় নিয়ে দুর্বৃত্তরা নৃশংসভাবে তাকে খুনের পর লাশ নিচ তলায় ফেলে রেখে যায়।

এরপর খবর পেয়ে থানা পুলিশ সন্ধায় অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি হিসাবে ওই কিশোরের লাশ উদ্যার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

সোমবার অনিকের বাবা মা ও পরিবারের লোকজনের কান্নায় হাসপাতাল এলাকার চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। নতুনপাড়ার বাসায় বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন মা অঞ্জনা।

অনিকের বাবা প্রদীপ বর্মণ বললেন, আমি ৪ ছেলেকে পড়াশুনা করানোর জন্য শহরে এসে ভাড়া বাসায় থাকছি। আমার ছেলের কারো সঙ্গে কোন বিরোধ নেই। কারা এমন নির্মম ঘটনাটি ঘটিয়ে তার সর্বনাশ করে দিলো।

সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফয়েজুর রহমান বলেন, অনিক আমাদের স্কুলের  মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। আমরাও তাকে দিয়ে অনেক আশাবাদী ছিলাম। তার এরকম মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা শোকাহত হয়েছি। হাসপাতালে তার মরদেহ দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। অনিক চন্দ্র বর্মণের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান তিনি।

সোমবার বিকেলে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি শহীদুর রহমান বললেন, অজ্ঞাত অবস্থায়  উদ্যার হওয়ায় লাশটি স্কুলছাত্র অনিকের। দ্রুত সময়ের মধে হত্যার কারন ও হত্যাকান্ডে কারা কারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে শনাক্ত করে হত্যাকারীদের সর্ব্বোচ্য শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন